৩ সন্তান নিয়ে ৬ সন্তানের জননী উধাও

সাহাবুদ্দিন সিকদার প্রকাশিত: ৩০ জুন , ২০২৫ ১৬:০৬ আপডেট: ৩০ জুন , ২০২৫ ১৬:০৬ পিএম
৩ সন্তান নিয়ে ৬ সন্তানের জননী উধাও
৩ সন্তান নিয়ে ৬ সন্তানের জননী উধাও /চরফ্যাশনে ইউএনও’র অফিস সহকারি প্রভাবশালী, তাই মামলা নেয়নি পুলিশ

ভোলার চরফ্যাশনে তিন সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে স্বামীর ঘর ছেড়ে পরকীয়া প্রেমিকের হাত ধরে উধাও হয়েছে ৬ সন্তানের জননী। ওই নারীর স্বামীর অভিযোগ, ইউএনও’র অফিস সহকারি সোহাগের সহযোগীতায় মুরাদ তার স্ত্রীকে নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় ২৫ জুন স্বামী ইয়াকুব মিস্ত্রি বাদী হয়ে স্ত্রীর সন্ধান চেয়ে চরফ্যাশন থানায় সাধারন ডায়েরী করেন। শুক্রবার দুপুরে ছেলে ইয়াছিন বাদী হয়ে মাকে ফেরত পেতে উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে ওসি চরফ্যাশন থানাকে নির্দেশ দেন।চরফ্যাশন থানা পুলিশের হস্তক্ষেপে  রবিবার ২৯ জুন ৬ সন্তানের জননীকে উদ্ধার করে থানায় আনা হয়। তবে চরফ্যাশন থানার ওসি জানান, পুলিশ উদ্ধার করেনি ওই নারী নিজেই ৩ সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে থানায় এসেছেন। পরকিয়া প্রেমিক মুরাদের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে। সে আগের স্বামীকে তালাক দিয়েছে। বিয়ের প্রমানপত্র দেখেছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, প্রমান পত্র দেখাতে পারেনি বলেছে একমাস পর দেখাবে।
এদিকে রবিবার বিকাল ৩টায় স্বামী ইয়াকুব মিস্ত্রি ফ্যাশন স্কয়ারে শহিদ মিনারের সামনে সংবাদকর্মীদের কাছে অভিযোগ করে তিনি জানান, এ বিষয়ে থানায় মামলা করতে চেয়েছেন। চরফ্যাশন থানার ওসি মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ হয়ে আমার মামলা না নিয়ে আমাকে গ্রাম আদালতে মামলা করতে বলেছেন। তিনি বলেন আপনার ৬ সন্তানের মধ্যে তিন সন্তান তারা ( স্ত্রী আয়শা ও পরকীয় প্রেমিক মুরাদ) নিয়ে যাক আর তিন সন্তান আপনি নিয়ে যান।
স্বামী ইয়াকুব মিস্ত্রি সংবাদকর্মীদের কান্না জড়িত কন্ঠে আরো বলেন, ১৯বছর সংসার জীবনে তাকে নিয়ে সুখের সংসার গড়েছি। তার কোন ইচ্ছা অপুর্ন রাখিনি। আমি তাকে বিশ্বাস করে টাকা পয়সা স্বর্নালংকার সহ পুরো সংসার তার হাতে দিয়েছি। কখনো ভাবিনি আমার সংসার  এবং সন্তানদের ভবিষ্যত নষ্ট করে ইউএনও অফিসের সোহাগের সহযোগীতায় মুরাদের হাত ধরে সব চুরি করে সে এভাবে চলে যাবে। আমি আমার সন্তানদের ভবিষ্যত নিয়ে এখন উদ্বিগ্ন।
এ দম্পতির দ্বিতীয় পুত্র ইয়াছিন জানান, আমার বাবার সাথে আমার মায়ের কখনো কোন ঝগড়া হয়নি। ইউএনও অফিসের সোহাগ ও মুরাদ  প্রতিদিন রাতে আমাদের বাসায় যেতো । সোহাগ আমার মাকে মুরাদের প্রতি লোভনীয় অফার স্বর্নালংকার ও টাকা পয়সা এবং সুন্দর ঘর করে দিবে বলে লোভ দেখাতো। আমার বাবাকে সহজ সরল পেয়ে মাকে ভাগাইয়া নিয়া গেছে। এখন আমরা আমার মাকে চাই।
ইয়াকুব মিস্ত্রির স্ত্রী আয়েশা থানায় সংবাদকর্মীদের বলেন, আমি আমার স্বামীর কাছে ভালো ছিলাম না এ কারণে প্রেমিক মুরাদের সঙ্গে গিয়েছি। মুরাদের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়েছে। আইনি আশ্রয়ের জন্য থানায় এসেছি।
অভিযুক্ত মুরাদ আত্মগোপনে থাকায় অভিযোগের বিষয়ে তার বক্তব্য জানা যায়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস সহকারি মো. সোহাগ জানান, এঘটনায় তিনি জড়িত নন।
চরফ্যাশন থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান। উদ্ধার করিনি। ওই নারী নিজ ইচ্ছায় থানায় এসেছে। সে পুর্বের স্বামীকে তালাক দিয়ে মুরাদকে বিয়ে করেছে। এ বিয়ের প্রমানাদি এক মাস পর দেখাবে বলেছে। টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ হয়ে পুর্বের স্বামীর মামলা না নিয়ে  তিন সন্তান বাবাকে এবং তিন সন্তান মাকে দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি। এঘটনায় ইউএনও’র অফিস সহকারি সোহাগ জড়িত কি না এবিষয়ে আমরা ওই নারীকে কিছু জিজ্ঞাসা করিনি আর ওই নারীও আমাদের কাছে তার বিষয়ে কিছু বলেনি।
উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা রাসনা শারমিন মিথি জানান, ৬সন্তানের জননী উধাও’র বিষয়ে আমার অফিস সহকারি সোহাগকে জড়িয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি মিমাংসার জন্য চরফ্যাশন থানার ওসিকে দায়িত্ব দিয়েছি। 
 এদিকে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তার হস্তক্ষেপ এবং থানার প্রশাসনের পশ্নবিদ্ধ মীমাংসা নিয়ে ক্ষুব্ধ চরফ্যাশনের সাধারন মানুষ। সোহগের এলাকায় খোজ নিতে গেলে এলাকাবাসী জানায়, ৬ সন্তানের জননীকে পরকীয়া প্রেমে পালাতে সাহায্য করার মূল হোতা ইউএনও'র অফিস সহকারী নাজির সোহাগ। তিনি ছিলেন পিয়ন। এখন সরকারি নাজির। দুই স্ত্রীর নামে রয়েছে চরফ্যাশন বাজারে দুটি দোকান।  আরো দুটি বিল্ডিং আছে চরফ্যাশনের সদর সহ বিভিন্ন জায়গায়। এত সম্পদ  করছেন কিভাবে? তার মাসে আয় কত? মাসে বেতন পাচ্ছেন কত? এই সমস্ত আয়ের উৎস কি? পরিশেষে তার খুটির জোর কোথায়? জনমনে রয়েছে প্রশ্ন?

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo