এক গর্ভবতী নারীকে চুরির অপবাদে মারপিট, গর্ভপাত ঘটানো ও জেল খাটানোর অভিযোগ দায়ের

কোহিনূর আলম প্রকাশিত: ২৭ আগস্ট , ২০২৫ ১৭:৫২ আপডেট: ২৭ আগস্ট , ২০২৫ ১৭:৫২ পিএম
এক গর্ভবতী নারীকে চুরির অপবাদে মারপিট, গর্ভপাত ঘটানো ও জেল খাটানোর অভিযোগ দায়ের

নেত্রকোণার কেন্দুয়ায় এক গর্ভবতী নারীকে মিথ্যা চুরির অপবাদে মারপিট করে তার গর্ভপাত ঘটানো ও জেল খাটানোর ঘটনায় বিজ্ঞ আমলী আদালতে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে ।

গত বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) গন্ডা ইউনিয়নের গাড়াদিয়া গ্রামের ভুক্তভোগী নারীর স্বামী মোঃ শহিদুল (৪৫) মিয়া বাদী হয়ে এ অভিযোগ দায়ের করেন । যার সি,আর মোঃ নং ২০১ (১) ২০২৫ ।

অভিযুক্তরা হলেন, প্রতিবেশী - ১। সুমা আক্তার (২৮), স্বামী- মোঃ আলামিন, ২। বদরুল আমিন (২৫), পিতা- মোঃ আব্দুল কদ্দুছ । স্বাক্ষী করা হয়েছে ৫জনকে । 

অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয় , আসামীগণের সহিত বাদী পক্ষের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শত্রুতা চলে আসছিলো । আসামীগণের বাড়ীতে তাদের ভাগিনা জিহাদ হাসান চুরি করার পরে পূর্ব পরিকল্পিত মতে শহিদুলের স্ত্রী সেলিনা আক্তারকে ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে গত ৬জুন বিকালে গর্ভবতী জানা স্বত্বেও তাকে তার বাড়ীতে এসে ধরে ফেলে । এরপর ভুক্তভোগীকে মাটিতে ফেলে দিয়ে তলপেটে স্বজোরে আঘাত করে গুরুতর জখম করে তারা । ফলে তার স্ত্রীর যৌনাঙ্গ দিয়া সামান্য ব্লিডিং শুরু হয় । 

পরে তার ডাক চিৎকারে তার স্বামী শহীদুলসহ লোকজন ঘটনাস্থলে ফিরাইতে গেলে তাদেরকে খুন জখমের হুমকি দিয়ে তারা তাদের ক্ষমতাবলে পুলিশ এনে তার স্ত্রীকে মিথ্যা চুরির দায়ে পুলিশের হাতে ধরিয়ে দেয় । অতঃপর তার স্ত্রী জামিনে মুক্তি পাওয়ার পরও সামান্য রক্তক্ষরণ হতে থাকে । গত ২৩ জুলাই সন্ধ্যায় তার স্ত্রী বাড়ীতে ঘরে থাকাবস্থায় আবারও আসামীগণ ঘটনাস্থলে জাবরাইয়া ধরে মাটিতে ফেলে দিয়ে তলপেটেসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে স্বজোরে কিল, ঘুশি ও লাথি মারে । মারপিটের কারণে পুনরায় তার স্ত্রীর যৌনাঙ্গ দিয়া রক্তক্ষরণ শুরু হলে সাক্ষীগণের সহায়তায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় গর্ভপাত হয় । এমতাবস্থায় আসামীগণের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্টের আদেশ দানে সুবিচার কামনা করেন বিজ্ঞ আদালতের কাছে ।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গত ৪জুন দিবাগত রাতে বিদেশ ফেরত আলামিনের ঘরে চুরি হলে তার ভাগিনা জিহাদ হাসান ও শহীদুলের স্ত্রীকে পুলিশ গত ১১জুন গ্রেফতার করে ও জেল হাজতে প্রেরণ করে । কথা হয় শহীদুল, তার স্ত্রী সেলিনা আক্তার , আলামিনের মা হালিমা আক্তার ও স্থানীয়দের সাথে ।

মোঃ শহিদুল মিয়া বলেন, মিথ্যা চুরির অভিযোগে আমার স্ত্রী জেল খেটেছে । ওদের দ্বারা মারধরের শিকার হয়ে তার গর্ভপাত হয়েছে । মেডিকেল কাগজপত্রও রয়েছে । তিনি আরো বলেন, বদরুল আমিনদের সাথে আমাদের বাড়ির সীমানা নিয়ে পূর্ব শত্রুতার জেরে এমনটা হতে পারে ।

সেলিনা আক্তার বলেন, জিহাদ হাসান এর আগেও চুরি করেছে অনেকেই জানে । পাড়া প্রতিবেশী হিসেবে একজনের বাড়িতে অন্যজনের যাওয়া আসা হওয়া স্বাভাবিক । কিন্তু আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে জেল কাটিয়েছে ওরা । তিনি আরো বলেন, তাদের মারপিটে আমার পেটের বাচ্চাটা পর্যন্ত মারা গেছে । আমি এর বিচার চাই ।

আলামিনের মা হালিমা আক্তার বলেন, চুরির সাথে জড়িত থাকার কারণে পুলিশ তাকে নিয়ে যায় । এতে আমাদের হাত নেই । আর শহীদুলের স্ত্রীকে কেউ মারপিট করে নি । কেনো তাকে মারতে যাবো ? 

এ বিষয়ে কেন্দুয়া থানার এসআই ও উক্ত অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি । বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে । খুব দ্রুত সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিজ্ঞ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে ।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo