চাঁদপুরে ফরিদগঞ্জে প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে চলছে কৃষি জমির মাটি লুটপাটের মহোৎসব

জাকির হোসেন সৈকত প্রকাশিত: ১৩ মার্চ , ২০২৫ ১২:১৯ আপডেট: ১৩ মার্চ , ২০২৫ ১২:১৯ পিএম
চাঁদপুরে ফরিদগঞ্জে প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে চলছে কৃষি জমির মাটি লুটপাটের মহোৎসব
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে অবাধে চলছে মাটি কাটার মহোৎসব

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে অবাধে চলছে মাটি কাটার মহোৎসব। এতে করে যেমন ফসলে জমি ক্ষতি সাধিত হচ্ছে তেমন নষ্ট হচ্ছে জমির উর্বরতা। খনিজ ও জৈব উপাদান বিশেষ করে হিউমাস (জৈব কণা) সমৃদ্ধ মাটির এই অংশ তুলে ফেলার কারণে জমির উর্বরতা শক্তি কমে যাচ্ছে। সরকারের আইনকানুন ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আইনের শেকল ভেঙ্গে অবৈধ  ট্রাক্টর দিয়ে চলছে মাটি কাটা। এতে পুরো উপজেলা জুড়ে কৃষি জমির মাটি কাটার মহোৎসবে রুপ নিয়েছে।
কৃষিবিদরা বলছেন, এর ফলে বেশ কয়েক বছর ওই সব জমিতে ফসলের কাঙ্খিত উৎপাদন হবে না। ইটভাটায় ব্যবহার ও ঘরবাড়ির ভিত্তি তৈরির জন্য মাটি কাটা হচ্ছে বলে জানা গেছে। 
কৃষি জমিতে হালচাষের জন্য আমদানিকৃত মাহিন্দ্র ট্রাক্টরে বডি সংযুক্ত করে সড়কে কখনো কৃষি জমির মাটি, কখনো ইটা-বালি পরিবাহন করছে এই অবৈধ মোটর যান। অদক্ষ চালক দিয়ে পরিচালিত এ ট্রাক্টরের গতির কারনে ইতোমধ্যে বেশ কয়েক দুর্ঘটনা ঘটেছে। ট্রাক্টরের চলাচল দেখে মনে হচ্ছে সড়কে ট্রাক্টরের মিছিল চলছে। 
সরেজমিনে দেখা গেছে, একশ্রেণির ট্রাক মালিক ও চালক কৃষকদের প্রলোভন দেখিয়ে মাটি কিনে নিচ্ছেন। প্রতি ট্রাক মাটি তাঁরা বিক্রি করছেন ১৪০০ থেকে ২০০০ টাকা।
উপজেলার ৯নং গোবিন্ধপুর ইউনিয়নের ধানুয়া গ্রামে দীর্ঘ ২/৩ মাস ধরে চলছে মাটি কাটা। বিষয়টি প্রশাসন জেনেও না জানার ভান করে রয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।   
জমির মালিক ও মাটি কাটার সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকেরা বলেন, বসতভিটা ভরাট ও বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণের ও ব্রিক ফিল্ড  জন্য মাটি কাটা হচ্ছে। কোনো কোনো স্থানে মাটি কাটার কাজে এক্সকাভেটর (খনন যন্ত্র) ব্যবহার করা হচ্ছে।
ধানুয়া বিলে গিয়ে দেখা গিয়েছে,  কৃষি জমিতে দুই থেকে আড়াই ফুট গভীর করে খনন যন্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে মাটি কাটা হচ্ছে। জমির পাশে দাঁড়ানো ট্রাকে মাটি তুলছেন শ্রমিকেরা। বোরোর আবাদী জমি নষ্ট করে ট্রাকদিয়ে  জমির মাঝখান দিয়ে চলাচল করছিল। এসব জমিতে দুই থেকে আড়াই ফুট গভীর করে মাটি তোলা হচ্ছে।
কৃষি জমির মাটি ক্রয় বিক্রয়ের সাথে জড়িত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পদপদবী দ্বারী নেতাদের ছত্রচায়ায় থাকা প্রভাবশালী চক্র। ফলে নির্বিকার সাধারণ কৃষকরা।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন সচেতন নাগরিক বলেন, বিভিন্ন সময়ে ইউনিয়ান পর্যায়ের প্রশাসনের লোকজন আসলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছেনা, তাদেরকে অপরাধিরা মানছেনা, নাকি ম্যানেজ হচ্ছে বিষয়টি আমাদের বুঝে আসছেনা।
মাটিকাটার সাথে জড়িত কয়েকজন বলেন, আমরা প্রশাসনের অনুমিত নিয়ে কাজ করতেছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কল্লোল কিশোর সরকার বলেন, কৃষি জমি থেকে মাটি কাটার কারনে আগামীতে কৃষি আবাদ হুমকিতে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। আমরা নজরদারি করছি, তথ্য পেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করে থাকি। 
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিয়া সুলতানা বলেন, আমরা মাটি কাটার জন্য কোন অনুমতি দেই নাই। বিষয়টি তদন্ত করে দেখব। 

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo