রাজবাড়ীতে সংঘটিত একটি ডাকাতি মামলার তদন্তে আন্তঃজেলা ডাকাত চক্রের ৫ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে রাজবাড়ী জেলা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে রয়েছেন একাধিক জেলার চিহ্নিত ও মামলাভুক্ত অপরাধী। সোমবার (১৬ জুন) বিভিন্ন সময় তাদের গ্রেফতার করা হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানান, গত ২৪ মে রাত আনুমানিক ১টা ৪৫ মিনিটে রাজবাড়ী সদর উপজেলার চন্দনী ইউনিয়নের এক বাড়িতে সংঘবদ্ধ ডাকাত দল লোহার রড, চাপাতি, ছ্যানদা ও কাঠের বাটাম নিয়ে হামলা চালায়। তারা সীমানার তারকাটা কেটে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে এবং দরজা ভেঙে ঘরের মধ্যে ঢোকে। এ সময় ভিকটিমের বড় ভাইকে মাথায় আঘাত করে গুরুতর জখম করে এবং অস্ত্র ঠেকিয়ে ভিকটিমের পরিবারকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে ৬ লক্ষ টাকা ও ৫/৬ ভরি স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নেয়।
এ ঘটনায় রাজবাড়ী সদর থানায় একটি ডাকাতি মামলা (নং-৩৯, তারিখ: ২৪/০৫/২০২৫, ধারা ৩৯৫/৩৯৭ পেনাল কোড) দায়ের করা হয়।
ডাকাতির ঘটনার পর রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার মোঃ কামরুল ইসলামের নির্দেশে এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) শরীফ আল রাজীবের তত্ত্বাবধানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। জেলা গোয়েন্দা শাখার ওসি মোঃ মফিজুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর, কালিয়াকৈর, সালনা ও চন্দ্রা এলাকায় অভিযান চালিয়ে নিম্নোক্ত ৫ জনকে গ্রেফতার করে:
শাহ আলম ভাঙ্গারী (৪৫) – গাজীপুরের কাশিমপুর থানার সারদাগঞ্জের বাসিন্দা; তার বিরুদ্ধে ৫টি ডাকাতি মামলা রয়েছে। শফিকুল ইসলাম (৩৬) – রংপুর জেলার তারাগঞ্জ উপজেলার একরচালি ইউনিয়নের বাসিন্দা; তার বিরুদ্ধে ১০টি মামলা রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতি, বিস্ফোরক দ্রব্য, মাদক, চুরি ও ডাকাতির প্রস্তুতির মামলা। নুর হোসেন (৪০) – সিরাজগঞ্জ জেলার চৌহালী উপজেলার বাসিন্দা; তার নামে ২টি মামলা রয়েছে। মামুন সরকার (৪২) – টাঙ্গাইলের ভূয়াপুর উপজেলার কুঠিবয়রা এলাকার বাসিন্দা। মোঃ সেলিম (৩০) – টাঙ্গাইলের ভূয়াপুর উপজেলার রামাইলের চর গ্রামের বাসিন্দা।
গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই চক্রের আরও সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত থাকবে। অভিযানে পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তি ও মাঠ গোয়েন্দাদের সমন্বয়ে কাজ করেছে।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে রাজবাড়ী ছাড়াও গাজীপুর, ঢাকা, রংপুর, দিনাজপুর, কুমিল্লা ও মানিকগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। পুলিশ জানায়, এ ধরনের আন্তঃজেলা সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করে তারা অভিযান পরিচালনা করছে।
পুলিশ সুপার মোঃ কামরুল ইসলাম জানান, “রাজবাড়ী জেলাকে অপরাধমুক্ত রাখতে জেলা পুলিশ দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। অপরাধীদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলবে।”