যশোরের অভয়নগরে ঘটক সেজে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে ভয়াবহ প্রতারণার মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা আত্মসাৎ এর ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় চক্রের মূল হোতাকে খুলনার ফুলতলা থেকে আটক করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গত মঙ্গলবার বেলা ১টার সময় খুলনা জেলার ফুলতলা থানাধীন পয়গ্রাম এলাকা হতে আসামী মোঃ ইয়াছিন আরাফাত (২০) কে গ্রেফতার করে। এসময় তার হেফাজত হতে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত একটি মোবাইল ফোন জব্দ করেছে। ডিবি সূত্র জানায়, নওয়াপাড়া বাজারের একটি সারের অফিসর কর্মচারী অভয়নগরের বারান্দি পূর্বপাড়া এলাকার নয়ন হোসেন ভাগ্নির বিয়ের কথাবার্তা চলছিল। হঠাৎ নয়নের মোবাইলে একটি অপরিচিত নাম্বার থেকে ফোন আসে এবং নিজেকে ঘটক বলে পরিচয় দেয়। কথাবার্তার এক পর্যায়ে সেই ব্যক্তি দুটি মোবাইল নাম্বার দেয় এবং কল দিতে বলে, এর কিছুক্ষণ পরেই উক্ত নম্বর দুটি থেকে ফোন আসে এবং ঘটক পরিচয় দিয়ে বলে আপনাকে পাত্রের বাবা পাত্রী দেখতে আসার সময় জানিয়ে দিবে। একই দিন বিকালে ভিকটিমের নাম্বারে সেই নাম্বার থেকে ফোন আসে এবং নিজেকে পাত্রের বাবা পরিচয় দেয়। সে বলে আগামী শুক্রবার তারা পাত্রী দেখতে আসবে। পরবর্তীতে একই তারিখ রাত অনুমান সাড়ে আটটার দিকে পাত্রের বাবা সেই নাম্বার থেকে ফোন করে জানায় তার ছেলে ঝিকরগাছায় প্রাইভেটকারে যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছে। সে একটি মোবাইল নাম্বার দিয়ে বলে এটি তার ছেলের নাম্বার এবং ভিকটিম যেন দ্রুত যোগাযোগ করে। পরবর্তীতে নয়ন ওই নাম্বারে যোগাযোগ করলে পাত্র জানায় সে ঝিকরগাছা এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে এবং গাড়ির ড্রাইভারের অবস্থা আশঙ্কাজন, তাকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য ৫০ হাজার টাকা লাগবে যেটা নয়নকে বিকাশের মাধ্যমে দিতে বলে এবং টাকাটা ড্রাইভারের চিকিৎসা ব্যবস্থা করে পরে ফেরত দিবে বলে জানায়। নয়ন তার কথায় বিশ্বাস করে দ্রুত তার দেওয়া নাম্বারে বিকাশ ও নগদের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু পরবর্তীতে সে পুনরায় ২৫ হাজার টাকা পাঠাতে বললে নয়নের মনে কিছুটা সন্দেহ হয় এবং সে তাদের দেওয়া নাম্বারে ফোন দিলে বন্ধ পায়। তখন নয়ন বুঝতে পারে সে কোন সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়েছে। নয়নের এজাহারের প্রেক্ষিতে যশোরের পুলিশ সুপার রহস্য উদঘাটনের জন্য জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) যশোর এবং সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন কে নির্দেশনা দেন। পরবর্তীতে ডিবির অফিসার ইনচার্জের নেতৃত্বে এসআই(নিঃ)/শেখ আবু হাসান, এএসআই(নিঃ)/ সৈয়দ শাহীন ফরহাদ এবং সাইবার ক্রাইম ইনভেষ্টিগেশন সেলের সমন্বয়ে একটি টিম অভিযান পরিচালনা করে চক্রের হোতা ইয়াছিন আরাফাতকে আটক করে। গ্রেফতারকৃত আসামীকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।