বাদী একজন চিকিৎসক এবং প্রতিনিয়ত তার চেম্বারে রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। এরই ধারাবাহিকতায় আসামি মোঃ বেনজির হোসেন(৪১), চিকিৎসা নিতে আসে বাদীর চেম্বারে এবং একপর্যায়ে সে নিজেকে সেনাবাহিনীর মেজর পরিচয় দেয়। সে ক্যাডেটে পড়াশোনা করেছে বলে জানায়।
একপর্যায়ে আসামি বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে বাদীকে প্রেমের প্রস্তাব দিতে থাকে এবং বাদীকে বিয়ের মিথ্যা আশ্বাস দেখিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে।
পরবর্তীতে বাদী তার প্রেমের ফাঁদে আটকে যায়, তখন আসামি নানা উপায়ে আবাসিক হোটেলে নিয়ে মিথ্যা আশ্বাস প্রদান করে বাদীর সাথে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। আসামি বাদীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের সময় অত্যন্ত সুকৌশলে বাদীর নগ্ন ছবি ও ভিডিও ধারণ করে রাখে।
এরপর আসামি বাদীকে উক্ত ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে দেবার ভয় দেখিয়ে বাদীর বাসায় এসে তার সাথে জোর পূর্বক শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে।
একটা সময় আসামি বাদীকে জানায় যে তার বিদেশে যোগাযোগ রয়েছে এবং সে বাদীকে ভালো চাকরির ব্যবস্থা করে দিবে মর্মে বাদীর নিকট হতে বিভিন্ন সময়ে সর্বমোট ৫০,০০,০০০/-(পঞ্চাশ লক্ষ টাকা) নেয়। একপর্যায়ে বাদী বিয়ের জন্য চাপ প্রয়োগ ও টাকা ফেরত চাইলে আসামি তাকে কোন টাকা ফেরত দিবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেয়।
এরই মাঝে বাদী খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারেন যে, আসামি কোন মেজর নন, সে একজন প্রতারক। সে এভাবে নিজেকে বড় অফিসার দাবি করে প্রতারণার মাধ্যমে নারীদের সঙ্গে শারীরিসম্পর্ক স্থাপন ও অর্থ হাতিয়ে নিয়ে থাকে।
এমনতথ্য জানতে পেরে বাদী আসামিকে ডেকে এবিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে আসামি সব শিকার করে এবং এ সম্পর্কে কাউকে কিছু জানালে বাদীর শিশু পুত্রকে গুম করে দিবে এবং তার নিকট থাকা বাদীর নগ্ন ছবি ও ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি প্রদান করে।
এমন অবস্থায় বাদী কোন প্রকার উপায় অন্ত না পেয়ে থানায় এসে আসামির বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করলে বিষয়টি জেলার সম্মানিত পুলিশ সুপার জনাব রওনক জাহান মহোদয় অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করেন এবং জড়িত আসামিকে দ্রুত গ্ৰেফতারের জন্য সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেলকে নিদর্শননা প্রদান করেন।
বাদীর এজাহার ও সম্মানিত পুলিশ সুপার মহোদয়ের নির্দেশনায় যশোর সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল অদ্য ০৩/০৬/২০২৫খ্রিঃ ভোর রাতে অভিযান পরিচালনা করে নড়াইল সদর থানাধীন মির্জাপুর এলাকায় আসামি বেনজির হোসেনকে তার বসত বাড়ির শয়ন কক্ষ হতে গ্ৰেফতার করেছে।
এসময় আসামির নিকট হতে ০৬(ছয়)টি মোবাইল ফোন, তিনটি সিম কার্ড, আসামির নামীয় একটি পাসপোর্ট ও চারটি চেকের পাতা উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা হয়।
আসামিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে এবং সে বিভিন্ন সময়ে প্রতারণার মাধ্যমে নারীদের সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন সহ অর্থ হাতিয়ে নেয় মর্মেও জানায়।
এসংক্রান্তে গ্ৰেফতারকৃত আসামিকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আসামির নামে এর আগেও বিভিন্ন থানায় পর্নোগ্রাফি সহ একাধিক মামলা রয়েছে। সে একজন পেশাদার প্রতারক।
আসামির নাম ও ঠিকানাঃ
মোঃ বেনজির হোসেন (৪১), পিতা-মৃত জামির হোসেন, সাং-মির্জাপুর (পূর্বপাড়া), থানা-নড়াইল সদর, জেলা-নড়াইল।
উদ্ধারঃ
১। ০৬(ছয়)টি মোবাইল ফোন,
২। তিনটি সিম কার্ড,
৩। আসামির নামীয় একটি পাসপোর্ট,
৪। চারটি চেকের পাতা।