বৃষ্টি কিছুটা থামলেও এখনো অনেক এলাকায় জলাবদ্ধতা দূর হয়নি। বিশেষ করে যশোর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের অবস্থা ভয়াবহ। এমনও জায়গা আছে ঘরের মধ্যে হাঁটু সমান পানি জমে আছে। নিষ্কশন হওয়ার আপতত কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বিমানবন্দর সংলগ্ন আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, দুই দিনে যশোরে ১৪৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে সোমবার ৮৪ মিলিমিটার ও রোববার ৬২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। রোববার হঠাৎ করে আকাশ কালো হয়ে দুপুর আড়াইটার সময় মূষল ধারায় বৃষ্টি শুরু হয়। দুপুর সাড়ে তিনটার দিকে কিছুটা কমে যায়। এক ঘন্টার বৃষ্টিতে যশোর শহর ও শহরতলি অধিকাংশ এলাকা ও রাস্তাঘাট তলিয়ে যায়। তলিয়ে যায় বেজপাড়া চোপদারপাড়া, কবরস্থান পাড়া, চোপদারপাড়া, আনসার ক্যাম্প এলাকা, চোপদারপাড়া, টিবি ক্লিনিক, শংকরপুর, রেলগেট খড়কী, রেলরোড, কারবালা, বারান্দীপাড়া, সিটিকলেজ পাড়া উপশহর, নওয়াপাড়া, চাঁচড়াসহ অধিকাংশ এলাকা। এসব এলাকার ঘরের মধ্যেও পানি ঢুকে যায়। এমনকি রেলরোড, ষষ্টিতলা খাজুরা বাসস্ট্যান্ড, শিক্ষা বোর্ডের সামনেসহ বেশির ভাগ সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ায় পানি মধ্যদিয়ে পথচারী ও শিক্ষার্থীদের বাড়ি ফিরতে হয়। এই জলাবদ্ধতা কিছুতা দুর না হতেই পরের দিন সোমবার সারাদিন ৮৪ মিলি মিটার বৃষ্টি হওয়ায় আবারো অনেক এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। বেশি জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় পৌর এলাকায়। পৌরবাসীর অভিযোগ ড্রেনেজ ব্যবস্থা এর মূল কারণ। এবার ড্রেন গুলো পরিষ্কার করা হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু কোথাও উচু কোথাও নিচু হওয়ায় পানি ভালভাবে নিষ্কাশন হচ্ছে না। এছাড়া পানি নিষ্কশন হওয়ার একমাত্র পথ বিল হরিনা। সেখান পানি পৌছানোর রাস্তাগুলো অত্যন্ত সরু। ফলে পানির প্রবাহ বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে। এআ কারণে অনেক স্থানে পানি জমে আছে। বেজপাড়ার বাসিন্দা পরিবেশকর্মী ও রাজনীতিবীদ জিল্লুর রহমান ভিটু বলেন এখনো চোপদারপাড়াসহ কয়েকটি এলাকায় জলাবদ্ধতা আছে। জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য পৌরসভা কর্তৃপক্ষের উচিত বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে কোন জায়গা দিয়ে পানি বের হয়, সেই জায়গা পরিষ্কার করা। সেই সাথে ভৈরব নদ, মুক্তেশ্বরী ও হরিনার বিলের অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করা। হরিনার বিল দিয়ে পানি মুক্তেশ্বরী নদে গিয়ে পড়ে। কিন্তু মুক্তেশ্বরী পলিতে ভরে গেছে। আর বিল হরিণার মধ্যে অনেক স্থাপনা তৈরী হয়েছে। ফলে পানি নিষ্কশানের জয়গা নেই। নদ-নদী, খাল নালা অবৈধ দখল মুক্ত করতে না পারলে পৌরসভার ড্রেন পরিষ্কার করে কোন সুফল আসবে না। খলিলুর রহমান নামে আরেক বাসিন্দা জানান, ড্রেনেজ ব্যবস্থা খারাপ থাকায় তার এলাকায় এখনো জলাবদ্ধতা আছে। চলাচলে অনেক দুর্ভোগে পোহাতে হচ্ছে। ড্রেন গুলো ভাঙ্গা চোরা। ভাঙ্গা অংশ ড্রেনের মধ্যে পড়ে ড্রেন বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক জায়গা আছে রাস্তা ও ড্রেন সমান হয়ে গেছে। সে গুলো জরুরী ভাবে ঠিক না করলে সামনে আরো দুর্ভেগে পড়তে হবে এই অঞ্চলে বসবাসকারী সাধারণ মানুষকে। তিনি আরো জানিয়েছেন, ভারি বর্ষণের ফলে রাস্তা পানি জমে রাস্তার ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। এমনিতেই খানাখন্দে ভরা রাস্তা গুলো তার ওপর পিচ ও খোয়া পানির তোড়ে সরে গিয়ে রাস্তা গুলোতে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। যশোর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ সহীলুদ্দিন বলেন, পঙ্গু হাসপাতালের পূর্ব পাশ থেকে খড়কী পর্যন্ত এলাকায় তার বাড়ি। এলাকার ড্রেনের তুলনায় রাস্তা নিচু হওয়ায় জলাবদ্ধতা দুর হচ্ছে। দুর্ভোগের মধ্যে চলাচল করতে হচ্ছে। দুই দিনের বৃষ্টিতে ঘরের মধ্যে পানি জমে গেছে। অথচ পৌর প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেয়ার পর জলাবদ্ধতা নিরসনের কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এ ব্যাপারে পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মোরাদ আলীজানান, যশোর জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের ড্রেন পরিষ্কার করার কারনে বৃষ্টি হওয়ার পরেই পানি দ্রুত সরে যাচ্ছে। তবে কিছু জায়গায় ড্রেনের পানি বের হওয়ার মুখে পলিথিন জমে থাকায় জলাবদ্ধতা হয়েছে। সেগুলো পরিচ্ছন্ন কর্মীরা পরিষ্কার করছে।