লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার নিম্নাঞ্চল আবারও প্লাবিত হয়ে বন্যায় রুপ নিয়েছে। পৌর শহরে সৃষ্টি হয়েছে স্থায়ী জলাবদ্ধতা। বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় আবারও পানি বন্দি হয়ে পড়েছে লক্ষাধিক মানুষ,ও অনেক গবাদিপশু।
জানা যায়, উপজেলার নিম্নাঞ্চলীয় ইউনিয়নগুলোতে কোথাও ৪-৫ ইঞ্চি, কোথাও কোথাও ৯-১০ ইঞ্চি পানি বেড়েছে। নতুন করে টানা বৃষ্টিতে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় পানি নামছে খুবই ধীর গতিতে। এজন্য স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।
তবে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে উপজেলার চরপাতা, চরমোহনা, কেরোয়া, বামনী, সোনাপুরে বৃষ্টির পানি। এসব এলাকার মানুষ জানায়, উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫টি ইউনিয়নের মানুষ এখানে জলবন্দী হয়ে আছে। এসব ইউনিয়নের প্রচুর খাল ছিল, যা ছিল পানিনিষ্কাশনের প্রাচীন উপায়। এখানে অতীতেও প্রচুর বৃষ্টি হতো। খালগুলো সেই বৃষ্টির পানি ধরে রাখত এবং ডাকাতিয় নদী হয়ে মেঘনা নদীতে চলে যেতে সাহায্য করত। কিন্তু পানি চলাচলের পুরোনো পথ ডাকাতিয়াসহ খালগুলো ভরাট করে বাড়িঘর-দোকানপাট তোলা হয়েছে দশকের পর দশক ধরে কোথাও কোথাও আবারমাছ ধরার জন্য বাঁধ দিয়ে পানি যাতায়তে বাঁধা সৃষ্টি করা হচ্ছে,
বিপুল প্রবাসী আয় আসতে থাকায় রায়পুরে দুই দশক ধরে নির্মাণকাজের জোয়ার বইছে। মাঠঘাট-জলাশয় ভরাট করে বাড়িঘর বানানো হয়েছে পানিনিষ্কাশনের ব্যাপারটা না ভেবেই। কোথাও কোথাও খাল ভরাট করে রাস্তা তৈরি হয়েছে। ডাকাতিয়াসহ খালের দুই দিক আটকে মাছের খামার বানানো হয়েছে। বাকি খালগুলো ভরাট হয়ে কৃষিজমির চেহারা নিয়েছে। ডাকাতিয়া প্লাস্টিকসহ নানান শক্ত বর্জ্যের বিশাল ভাগাড় হয়ে আছে। ফলে একটু বৃষ্টি হলে রায়পুরে স্থায়ী জলবন্দী হয়ে পড়ে হাজার হাজার মানুষ।
রায়পুর পৌর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র এবিএম জিলানী বলেন, বন্যা ও জলাবদ্ধতায় উপজেলার মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। আমাদের দাবি পানি নিষ্কাশনের সঠিক ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে দ্রুত বন্যা ও জলাবদ্ধতার সমস্যা সমাধানের বর্তমান অন্তর্র্বতী সরকার দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান খান বলেন, রায়পুরে বন্যা পরবর্তী জলাবদ্ধতা আগে থেকেই ছিল। এখনো বৃষ্টি হচ্ছে। পরিস্থিতির অবনতি হলে উপজেলা প্রশাসন আগের মতোই মানুষের পাশে দাঁড়াবে। এদিকে পৌরসভার অংশের ডাকাতিয়া নদীর পরিষ্কার অভিযান চলছে। এছাড়াও ডাকাতিয়াসহ খালগুলো পুনরুদ্ধারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েটি নদী ও খালের বাধ কেটে ফেলা হয়েছে। দখলকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যহত থাকবে বলে জানা যায়।