৫ আগস্টের আগে গত ১৬ বছর এই অস্ত্রধারীদের ভয়ে ছিলেন জামালপুরের রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার সাধারন মানুষ
৫ আগস্টের আগে গত ১৬ বছর এই অস্ত্রধারীদের ভয়ে ছিলেন জামালপুরের রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার সাধারন মানুষ। জামালপুরে বর্তমান অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের আমলে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নির্যাতিত নেতাদের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের করা হলেও এই চিহ্নিত মীর্যা আযমসহ আওয়ামী লীগের দুনীর্তিবাজ, লুটপাটকারী ও অস্ত্রধারীরারা এখনও আটক হয়নি।
পতিত আওয়ামী সরকারের আমলে জেলা বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করে। সে সময় পুলিশের সামনেই জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র ছানোয়ার হোসেন ছানু, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারন সম্পাদক অধ্যাপক সুরুজ্জামানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবকলীগের নেতাকর্মীরা অস্ত্র ও লাঠিসোঠা নিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান ও জেলা বিএনপি অফিস ভাংচুর করে পেট্রোল দিয়ে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়। আবার আওয়ামী লীগই বিএনপি নেতাকর্মীদের দায়ী করে তাদের নাম দিয়ে সদর থানায় একের পর এক গায়েবী মামলা দায়ের করে নেতাকর্মীদেরকে বছরের পর বছর জেল খাটিয়েছেন।
জামালপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের আন্দোলনে প্রকাশ্যে যুবলীগের সাধারন সম্পাদক ফারহান আহমেদ শর্টগান ও সরকারী আশেক মাহমুদ কলেজ শাখা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক শাহরিয়ার রাফি পিস্তল হাতে নিয়ে তাদের নেতৃতে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগের সন্ত্রাসীরা অস্ত্র ও লাঠিসোঠা নিয়ে ছাত্রদের মিছিলে হামলা চালায়। এ ঘটনায় ১৭ আগস্ট জামালপুর সদর থানায় ফারহান আহমেদ ও শাহরিয়ার রাফিসহ ৩০৩ জনের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হয়। অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের আট মাসেও আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের কাছ থেকে অস্ত্র উদ্বার ও তাদের আটক করতে পারেনি।
কেন্দ্রীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক ও জামালপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শাহ মো: ওয়ারেছ আলী মামুন জানান, ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন দমাতে ও ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার জন্য ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা গণহত্যা শুরু করে, যা ৫ই আগষ্ট পর্যন্ত চলতে থাকে। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও তারা এখনো জামালপুরসহ বিভিন্ন জেলায় প্রকাশ্যে ঝটিকা মিছিল ও ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, জামালপুরের প্রশাসন উল্লেখযোগ্য তেমন কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। আমরা দলীয় বিভিন্ন সভা-সমাবেশ থেকে আওয়ামী লীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসী, দুর্নীতিবাজ ও অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানাচ্ছি। বিভিন্ন গণম্যাধমে সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে তবুও তারা আটক হচ্ছে না। প্রশাসনে এখনও ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রভাব থাকায় এসব নেতাদের আটক করা হচ্ছে না। তাদেরকে দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবী জানান।
জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আবু ফয়সাল মোঃ আতিক জানান, আইনশৃংখলারক্ষাকারী বাহিনী মামলার আসামীদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ইতিপূর্বে যারা ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলা করেছিল তাদের অনেককেই গ্রেফতার করে জেলহাজতে দেয়া হয়েছে। এখনও যারা গ্রেফতার হয়নি তাদেরকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে।