ভোলার তজুমদ্দিনে নার্স দিয়েই চলছে ডাক্তারের কাজ

শরীফ হোসাইন প্রকাশিত: ২৭ আগস্ট , ২০২৫ ১৫:০৫ আপডেট: ২৭ আগস্ট , ২০২৫ ১৫:০৫ পিএম
ভোলার তজুমদ্দিনে নার্স দিয়েই চলছে ডাক্তারের কাজ

 ভোলার তজুমদ্দিনে ৫০ শয্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ উপজেলার দেড় লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন ১ জন মাত্র ডাক্তার। ১৫ জন ডাক্তারের পদ চালু থাকলেও ওই একজন ডাক্তারকে পার্শ্ববর্তী উপজেলা মনপুরা থেকে প্রেষণে (ডেপুটেশন) এনে কোনোমতে চিকিৎসা সেবা চালিয়ে নিচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এছাড়া মিটিং, প্রশিক্ষণ ও প্রশাসনিক কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা। জনবল সংকটের কারণে এখানে প্রায় সময় নার্স দিয়েই চলছে ডাক্তারের কাজ। এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ৩ জন ডাক্তার তজুমদ্দিনে পোস্টিং দিলেও ২ মাস অতিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও তারা যোগদান করেননি। ফলে চিকিৎসক ও জনবল সংকটে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে এ উপজেলার স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম। প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে পড়ছে দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীরা। বহির্বিভাগ ও আন্তঃবিভাগের দায়িত্বরতদের প্রতিদিন ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, তজুমদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ ৫০ শয্যা ভবন ও সরঞ্জাম থাকলেও পদ সৃজন না হওয়ায় কার্যক্রম চলছে ৩১ শয্যা অনুযায়ী। এখানে কনসালটেন্ট ও মেডিকেল অফিসারের ১৫টি পদে কর্মরত রয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাসহ মাত্র ২ জন। এছাড়া নার্স ও মিডওয়াইফ ৩১টি পদ থাকলেও কর্মরত আছেন ১১ জন, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ৬টি পদে কর্মরত আছেন ২ জন, অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর ৩টি পদের ৩টিই শূন্য, প্যাথলোজিস্ট পদে ২টি পদই শূন্য, ইউনিয়ন সেন্টার স্যাকমো ৫টি পদের ৫টিই শূন্য রয়েছে এবং তৃতীয় শ্রেণীর ৬৬টি পদের বিপরীতে শূন্য রয়েছে ৩১টি।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির একদিকে যেমন জনবল সঙ্কট, অন্যদিকে রয়েছে সরঞ্জামাদি ও টেকনিশিয়ানের সঙ্কট। লোকবলের অভাবে অপারেশন থিয়েটার, এক্স-রে, ইসিজি, আল্ট্রসনোগ্রাম মেশিনগুলো পড়ে আছে অচলাবস্থায়। উপজেলার চর মোজাম্মেল ও দুর-দুরান্ত থেকে চিকিৎসা নিতে আসা ময়ফুল, খাদিজা, আ: মতিনসহ কয়েকজন জানান, জেলা সদর হাসপাতাল দূরে হওয়া ও সামর্থ্য না থাকার কারণে বাধ্য হয়ে এখানেই চিকিৎসা সেবা নিতে আসতে হয়। আর সেই কারণে ঝুঁকি নিয়ে ভর্তি হতে হয় অনেক রোগীদেরকে। এছাড়া হাসপাতালটিতে এক্স-রে, আল্ট্রাসনোগ্রাফ মেশিন অকেজো থাকায় ও টেকনিশিয়ানের অভাবে এখানে ভর্তিকৃত রোগীদের অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা বাহির থেকে করাতে হয়। এতে করে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সেবা নিতে আসা রোগীরা।
হাসপাতালে কর্তব্যরত সিনিয়র নার্স মিশু দত্ত জানান, নার্স, ডাক্তার ও জনবল সংকটের কারণে ওয়ার্ডে রোগীদের কাঙ্খিত সেবা প্রদান করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। তার পরও ভর্তিকৃত রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদানে চেষ্টা করছেন তারা।
তজুমদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাহাত হোসেন জানান, পদায়নকৃত ৩ জন চিকিৎসক যোগদান না করার বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মহাপরিচালক বরাবর লিখিত আকারে অবহিত করা হয়েছে। চিকিৎসক ও জনবল সংকটের কারণে হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও আন্তঃবিভাগের প্রতিদিন ২ থেকে ৩শ’ রোগীদের মানসম্মত সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। সংকট নিরসনে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করছেন বলে জানান তিনি।


এই বিভাগের আরোও খবর

Logo