বড়াইগ্রামে ভূমি দস্যুদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন

দেলোয়ার হোসেন লাইফ প্রকাশিত: ১৭ জুন , ২০২৫ ১৪:৩০ আপডেট: ১৭ জুন , ২০২৫ ১৪:৩০ পিএম
বড়াইগ্রামে ভূমি দস্যুদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন

নাটোরের বড়াইগ্রামে জবর দখলকারী ভূমি দস্যুদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছে আব্দুর রাজ্জাক নামের এক ভুক্তভোগী। 
সোমবার (১৬ জুন) সকালে বনপাড়া পৌর শহরের একটি রেস্টুরেন্টে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। 
সংবাদ সম্মেলনে উপজেলার কায়েমকোলা গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক লিখিত বক্তব্যে বলেন, বড়াইগ্রাম উপজেলার ৫নং কায়েমকোলা মৌজাধীন আর.এস ২৯৬ নং খতিয়ান ভুক্ত ৬৭১, ৬৭২, ৬৯৮ ও ৬৯৯ দাগে ৩.৫০ একর, ২৮৫ নং খতিয়ান ভুক্ত ৬৮৮ দাগে ১.৩০ একর, ২৮৮ খতিয়ান ভুক্ত ৬৮৭, ১০৭২, ৯৫১ দাগে ১.৫৯ একর, সর্বমোট ৬.৩৯ একর জমি আমাদের পৈত্রিক ও ক্রয় সূত্রে প্রাপ্ত। যেখানে কবরস্থান, ঈদগাহ ময়দান ও পুকুরসহ ফসলি জমে রয়েছে। কিন্তু এক বছরেরও অধিক সময় মব সৃষ্টির মাধ্যমে কায়েমকোলা গ্রামের ভূমিদস্যু নামে পরিচিত আব্দুল মালেক ও ইসাহাক আলী গং জোর পূর্বক দখল করে রেখেছে। মূলত ঐতিহ্যবাহী ও সম্ভ্রান্ত একটি পরিবারকে সামাজিকভাবে হেও প্রতিপন্ন করা, দেশ ও বিদেশে তাদের অর্জিত সকল সম্মান ভূলুণ্ঠিত করা এবং উত্তরাধিকার ও ক্রয়কৃত সকল সম্পদ পর্যায়ক্রমে গ্রাস করে আমাদের নিশ্চিহ্ন করাই তাদের উদ্দেশ্য। আমাদের পরিবারের বেশিরভাগ সদস্য দেশ-বিদেশে সরকারি/বেসরকারি পর্যাযে পেশাগত কারণে গ্রামে অবস্থান সম্ভব হয় না, এই সুযোগে আমাদের স্থাবর/অস্থাবর সকল সম্পত্তি গ্রাস করার নীল নকশা করছে এ আব্দুল মালেক ও ইসাহক আলী গং। উল্লেখিত জমির একজন বৈধ মালিক এলাকার মৃত মতিউর রহমান সরকারের পুত্র ড. এস এম লুতফর রহমান একজন বৈদেশিক মুদ্রা/রেমিটেন্স যোদ্ধা, তিনি দীর্ঘ সময় জাপানে স্কলারসিপে অধ্যয়নরত ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি পরিবার সহ ইবি-২ ভিসায় আমেরিকাতে পরিবারসহ স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। প্রবাসে কষ্টার্জিত অর্থ দিয়ে তিনি নিজ এলাকায় কিছু জমি কিনেছেন যার অধিকাংশই এখন অবৈধ ভাবে জবর দখল করা হয়েছে। যাহা অত্যন্ত দুঃখজনক। ভুক্তভোগী আরো বলেন, 
বারবার প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের মধ্যস্থতায় বর্ণিত সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করা হলেও বৈধ দলিলাদি/কাগজাদি না থাকায় অভিযুক্ত ভূমিদস্যুগন গায়ের জোরে বিষয়টি উপেক্ষা করে এবং আইন কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে, আমাদের বৈধ এবং বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী খাজনা খারিজ কৃত প্রায় ১৮ বিঘা জমি জবরদখল করে রেখেছে, যা সম্পূর্ণই আইন পরিপন্থী। 
ভুক্তভোগী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের নাটোর-৪ (বড়াইগ্রাম- গুরুদাসপুর ) এর তৎকালীন এমপি ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারীর একান্ত ঘনিষ্ঠ সহচর ইছাহাক আলীর নেতৃত্বে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আব্দুল মালেক, আব্দুল কালাম , ওমর উদ্দিনের সহযোগিতায় সর্বপ্রথম ৩ একর ৫০ শতক পুকুর এবং এ সংলগ্ন জমি দখল করে। ভুক্তভোগী পরিবার পুলিশ প্রশাসনের সহায়তা কামনা করলে, স্বৈরাচার সরকারের দোসর হওয়ায় তারা আমাদের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এবং তৎকালীন এমপির মদতে জোরপূর্বক জবর দখল করে এবং পুকুরের মাছ লুণ্ঠন করে। এরপরে বিগত নয় মাস পূর্বে উল্লেখিত বাকী জমিগুলো জবর দখল করে নেয় ভূমিদস্য আব্দুল মালেক সরদার গং, সমস্যা সমাধানে তৎকালীন সময়ে বড়াইগ্রাম এসিল্যান্ড, পুলিশ প্রশাসন এবং যৌথবাহিনী তাদেরকে বৈধ কাগজপত্র নিয়ে আসতে বললে তারা তারা হাজির না হয়ে বিভিন্ন টালবাহানা করে।
এ সংক্রান্ত বিষয়ে অভিযুক্ত আব্দুল মালেক গং আদালতে একটি বাটোয়ারা মামলা দায়ের করে, বর্তমানে তা বিচারাধীন রয়েছে, কিন্তু তারা আদালত অবমাননা করে উপরোক্ত জমি জবরদখল করে। আব্দুল মালেক ও ইসাহক গং এর লাঠিয়াল বাহিনী একই এলাকার পলাশ , পিয়াস, আব্দুল খালেক দের সহযোগিতায় জমিতে থাকা সরিষা কেটে নিয়ে যায়। এঘটনায় যৌথ বাহিনীর কাছে অবৈধ দখলের ব্যাপারটি তারা স্বীকার করে এবং এই ধরনের কর্মকাণ্ডে তারা ভবিষ্যতে আর জড়িত থাকবেনা এই মর্মে মুচলেকা দিয়ে আসে। কিন্তু সেটিকে সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষা করে অদ্যাবধি জবরদখল অব্যাহত রেখেছে এবং পরিকল্পনা করছে আমাদের সকল জমিজমা তারা জোরপূর্বক জবর দখল করবে। ভূমিদস্যুরা হুমকি প্রদান করে যে, এ ঘটনায় আইনের আশ্রয় নিলে খুন করে ফেলা হবে। 
ভুক্তভোগী আব্দুর রাজ্জাক, এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, আমরা এই সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান চাই।
এ সকল বিষয়ে অভিযুক্ত আব্দুল মালেক সরদার মুঠোফোনে জানান, আমরা ১৯২০ সালের সিএস রেকর্ড মূলে প্রায় ২০ বিঘা জমি প্রাপ্য। আদালতে বাটোয়ারা মামলা বিচারাধীন রয়েছে। আদালত কর্তৃক উক্ত জমিতে স্ববস্থান জারি করা আছে। বিচারাধীন মামলা ভুক্ত জমি দখল করতে পারেন কিনা জানতে চাইলে, তিনি প্রসঙ্গ এড়িয়ে বলেন, উকিলের পরামর্শে আমরা জমি দখল নিয়েছি। তবে সিএস রেকর্ড মূলে সমাধান করতে চাইলে আমরা সব সময় প্রস্তুত আছি।
 সংবাদ সম্মেলনে অপর ভুক্তভোগী আব্দুল লতিফ সহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo