রাজশাহীর তানোর উপজেলাজুড়ে গ্রীষ্মের সূচনায়ই আম ও লিচুর বাগান ফলের ভারে নুয়ে পড়েছে। গোপালভোগ, হিমসাগর, ল্যাংড়া, বারি-৪ সহ নানা জাতের আম আর রসালো লিচুর সম্ভাব্য বাম্পার ফলনে কৃষক মহলে বইছে উৎসবের আমেজ।মৌসুমের শুরুতে অনুকূল আবহাওয়ার সুবাদে গাছে গাছে মুকুল ধরেছিল
আশা জাগানিয়া হারে। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে বেড়ে যাওয়া তীব্র তাপদাহ কিছুটা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে বৃষ্টির অভাবে কিছু কিছু গাছে কাঁচা আম ঝরে পড়ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। তবে তাঁরা মনে করছেন, যত্নবান পরিচর্যার মাধ্যমে এখনও বড় ধরনের ক্ষতি এড়ানো সম্ভব। তানোর উপজেলার মুন্ডুমালা পৌরসভা, বাধাইড় এবং তালন্দ ইউনিয়নের কৃষকরা দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন আম ও লিচু গাছের পরিচর্যায়। চলছে নিয়মিত সেচ কার্যক্রম, ভিটামিন স্প্রে এবং প্রয়োজনীয় সার প্রয়োগ। গত বছরের অতিরিক্ত গরমে ক্ষতির অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বছর শুরু থেকেই সতর্ক ছিলেন চাষিরা। তালন্দ ইউনিয়নের মোহর গ্রামের আমচাষি মো. মিলন বলেন, “বৃষ্টি না থাকায় কিছু গুটি ঝরে গেছে ঠিকই, তবে গাছে যে আম আছে, তা যদি ঠিকভাবে ধরে রাখা যায়, তাহলে লাভ ভালোই হবে। নিয়মিত পানি দিচ্ছি, ভিটামিনও স্প্রে করছি। তানোর উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর উপজেলায় প্রায় সাড়ে ৪৫০ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে। একইসঙ্গে লিচু উৎপাদনেও রয়েছে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি। কৃষি কর্মকর্তারা মাঠপর্যায়ে কৃষকদের পাশে থেকে তাদেরকে পরিবেশবান্ধব পরামর্শ ও সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মেদ জানান, তীব্র তাপদাহের মধ্যেও আমরা কৃষকদের পাশে আছি। তাঁরা যেন ফল ঠিকমতো ধরে রাখতে পারেন, সে জন্য নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছি। কীটনাশকের ব্যবহার কমিয়ে ফল উৎপাদনকেপরিবেশবান্ধবভাবে পরিচালনার উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। বড় কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে চলতি মৌসুমে ভালো ফলনের আশা করা যাচ্ছে। আবহাওয়ার বৈরীতার মাঝেও কৃষকদের কঠোর পরিশ্রম,
সচেতনতা ও প্রশাসনিক সহায়তায় এবারের মৌসুমটি তানোরের ফলচাষিদের মুখে হাসি ফোটাতে পারবে এমনটাই প্রত্যাশা স্থানীয় মহলের।