চট্টগ্রাম মহানগরের অন্যতম শিল্প ও বাণিজ্যিক এলাকা পূর্ব নাসিরাবাদ ও বায়েজিদ অঞ্চল আজ চরম অব্যবস্থাপনার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভ্যান, ট্রাক, বাসসহ বিভিন্ন ধরণের পরিবহন প্রতিনিয়ত চলাচল করে এই অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ বায়েজিদ বোস্তামী সড়ক দিয়ে। অথচ প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কটি আজ গর্ত, খানাখন্দ ও বিপদসংকুল ঢালের এক নির্মম দৃষ্টান্ত।
নগরের ২ নম্বর গেট থেকে অক্সিজেন মোড় পর্যন্ত সড়কজুড়ে প্রতি কিছু দূর পরপর ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত, যেন একেকটি মৃত্যুফাঁদ। জিইসি থেকে বহদ্দারহাট পর্যন্ত সম্প্রতি নির্মিত সড়কগুলোতেও দেখা দিয়েছে ভয়াবহ অবনতি বড় বড় গর্ত, দেবে যাওয়া জায়গা, উঁচু-নিচু ঢালু রাস্তা এখন নিত্যদিনের সঙ্গী। দুর্ঘটনার ঝুঁকি মাথায় নিয়ে গাড়ি চালানো এখন যেন বাধ্যতামূলক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বহদ্দারহাট নতুন ব্রিজ থেকে আসা গাড়িগুলো যে স্থানে দাঁড়ায়, সেখানে বিশাল আকৃতির গর্ত তৈরি হয়েছে। মাত্র কিছুদিন আগেই, সকাল ৯টায় এক নারী স্কুলগামী শিশুদের নিয়ে রিকশাসহ গর্তে পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হন। এ ধরনের দুর্ঘটনা এখন আর বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়—বরং নিয়মিত সংবাদ। গর্ত এড়িয়ে চলতে গিয়ে যানবাহনের গতি কমে যায়, সময় লাগে দ্বিগুণ। ফলে নাগরিকরা দেরিতে পৌঁছায় কর্মস্থলে, স্কুলে, হাসপাতালে।
আরেকটি মারাত্মক সমস্যা হচ্ছে বহদ্দারহাট এলাকার যানজট। মেয়র স্বয়ং একাধিকবার বলেছেন, হকারদের অবৈধ দখল ও অনিয়মিত ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার কারণে এই জ্যাম হচ্ছে। তাহলে প্রশ্ন—সমাধান কে দেবে? এসব সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব কি কেবল কথার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে?
চট্টগ্রামবাসী বারবার প্রতিশ্রুতি শুনেছে, কিন্তু বাস্তবে উন্নয়নের ছিটেফোঁটাও টিকে থাকে না। একটানা বৃষ্টিতে রাস্তাগুলোর বর্তমান চেহারা প্রমাণ করে, নগর পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে চরম ব্যর্থতা বিদ্যমান।
আমরা, চট্টগ্রামের নাগরিকরা, আর অবহেলার শিকার হতে চাই না। প্রয়োজন কার্যকর ও টেকসই সমাধান। নগরবাসী চায় মুক্তি—এই দুর্ভোগ, অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা থেকে।