দেশব্যাপী হাজারো আশেকান ও ভক্তদের অংশগ্রহণে সোমবার (২৬ মে) ফটিকছড়ির মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফে আধ্যাত্মিক পরিবেশে পালিত হলো মাইজভাণ্ডারী তরিকার প্রবর্তক হযরত গাউছুল আজম সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারী (ক.) এঁর চান্দ্রবার্ষিকী ওরশ শরীফ।
গাউছিয়া আহমদিয়া মঞ্জিলের সাজ্জাদানশীন হযরত মওলানা শাহসুফি সৈয়দ এমদাদুল হক মাইজভাণ্ডারী (ম.)'র আয়োজন ও ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত এই ওরশ শরীফের মাহফিল অনুষ্ঠিত হয় দরবার শরীফ সংলগ্ন শাহী ময়দানের পাশে হুজরা শরীফ প্রাঙ্গণে। মাহফিলে প্রধান অতিথি ছিলেন গাউছিয়া আহমদিয়া মঞ্জিলের সাজ্জাদানশীন হযরত মওলানা শাহসুফি সৈয়দ এমদাদুল হক মাইজভাণ্ডারী (ম.) এবং সভাপতিত্ব করেন গাউছিয়া আহমদিয়া মঞ্জিলের নায়েব সাজ্জাদানশীন ও মোন্তাজেম সৈয়দ ইরফানুল হক মাইজভাণ্ডারী।ওরশ উপলক্ষে সোমবার ভোর থেকে দরবারে খতমে কোরআন, খতমে খাজেগান, খতমে মজমুয়ামে সালাওয়াতে রাসুল (সা.), খতমে গাউছিয়া, মিলাদ মাহফিল, জিকির-আসকার ও বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। মিলাদ পরিচালনা করেন আঞ্জুমানে মোত্তাবেয়ীনে গাউছে মাইজভাণ্ডারী (শাহ এমদাদীয়া) কেন্দ্রীয় কার্যকরী সংসদের দারুত তায়ালীম প্রধান শিক্ষক মাওলানা জয়নাল আবেদীন ছিদ্দিকী।প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাজ্জাদানশীন হযরত এমদাদুল হক মাইজভাণ্ডারী বলেন, “আত্মশুদ্ধি ও সমাজ সংস্কারের মধ্য দিয়েই প্রকৃত ধর্মের চর্চা সম্ভব। ধর্মের দুটি দিক—একটি অভ্যন্তরীণ উন্নয়ন, অপরটি বাহ্যিক সমাজিক উন্নয়ন। মাইজভাণ্ডারী তরিকা এই দুই ধারাকে একত্রে ধারণ করে যুগ যুগ ধরে মানুষকে আলো দেখিয়ে আসছে।”সভাপতির বক্তব্যে সৈয়দ ইরফানুল হক মাইজভাণ্ডারী বলেন, “আমাদের নফস দমন করে আত্মশুদ্ধি অর্জন করতে হবে। এর মাধ্যমেই স্রষ্টার সন্তুষ্টি অর্জন সম্ভব। মাইজভাণ্ডারী তরিকার অনুসারীরা সপ্তকর্ম পদ্ধতির মাধ্যমে এই সাধনা করতে পারেন।”মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন শাহজাদা সৈয়দ এরহাম হোসাইন, আঞ্জুমানে মোত্তাবেয়ীনে গাউছে মাইজভাণ্ডারী (শাহ এমদাদীয়া) কেন্দ্রীয় কার্যকরী সংসদ, জেলা, মহানগর, বিভিন্ন উপজেলা, থানা, শাখা দায়রা, খেদমত কমিটি এবং গাউছিয়া আহমদিয়া এমদাদীয়া ওলামা কমিটির কর্মকর্তাবৃন্দ। ওরশে আগত ভক্তদের নিরাপত্তা ও সেবা কাজে নিয়োজিত ছিলেন মাইজভাণ্ডারী স্পেশাল ফোর্স ও বিপুলসংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক।এ সময় স্মরণ করা হয় ১৯৭৪ সালের ঐতিহাসিক মুহূর্ত, যখন খাদেমুল ফোকরা সৈয়দ দেলাওর হোসাইন মাইজভাণ্ডারী (ক.) হযরত গাউছুল আজম সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারী (ক.) কর্তৃক ব্যবহৃত হরিত্রি রঙের শাল মোবারক পরিয়ে সৈয়দ এমদাদুল হককে খেলাফত প্রদান করেন। সেই সময় তিনি ‘মানব সভ্যতা’ গ্রন্থের ভূমিকায় লিখেছিলেন, “আমার ছেলেদের মধ্যে যোগ্যতম ব্যক্তি সৈয়দ এমদাদুল হক মিঞাকে সাজ্জাদানশীন মনোনীত করিলাম। আঞ্জুমানে মোত্তাবেয়ীনে গাউছে মাইজভাণ্ডারী সমাজ সংস্কার ও নৈতিক উন্নয়নমূলক সমাজ সংগঠক পদ্ধতির সফলতার উদ্দেশ্যে গ্রন্থটি অর্পণ করিলাম।”ওরশ শেষে দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি, কল্যাণ কামনা করে বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করেন সাজ্জাদানশীন হযরত মওলানা শাহসুফি সৈয়দ এমদাদুল হক মাইজভাণ্ডারী (ম.)।