নরসিংদীতে প্রেমের অভিনয়, বিয়ের প্রতিশ্রুতি এবং মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে একের পর এক পুরুষকে নিঃস্ব করার অভিযোগে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। আলোচনার কেন্দ্রে মোসাঃ হোসনা আক্তার (৩৫) এক নারী, যিনি স্থানীয়ভাবে পরিচিত ‘মামলাবাজ নারী’ নামে। সর্বশেষ তার টার্গেট হয়েছেন নরসিংদী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী নাজির মো. ইকরাম হোসেন। অভিযোগ, প্রেমের নাটক ও বিয়ের প্রলোভন দিয়ে তিনি সরকারি এই কর্মকর্তাকে ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবন ধ্বংসের চক্রান্ত করছেন। প্রেম, বিয়ে, মামলা, অর্থ চেনা কৌশলের পুনরাবৃত্তি! তথ্যসূত্র বলছে, হোসনা আক্তারের প্রথম বিয়ে ভেঙে যায় মোটা কাবিন আদায়ের পর। দ্বিতীয়বার প্রেমের মাধ্যমে গড়ে ওঠা সম্পর্কও শেষ হয় মামলার মাধ্যমে। এরপর আসে তৃতীয় বিয়ে, টিকেছিল মাত্র ৯ দিন! প্রতিবারই একই প্যাটার্ন: প্রেম, বিশ্বাস, বিয়ে, হঠাৎ অভিযোগ, মামলা, এবং শেষতক মোটা অঙ্কের অর্থ আদায়। ২০১৬ সালে তার বিরুদ্ধে অপহরণ মামলাও দায়ের হয় (নরসিংদী মডেল থানায় মামলা নং-২৮), যে মামলায় তিনি দুই মাস কারাভোগ করেন। গাজী হোটেলের রহস্য: নেই রুম, নেই সত্যতা তবু মামলা সর্বশেষ অভিযোগে হোসনা দাবি করেন, সহকারী নাজির ইকরাম তাকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে গাজী হোটেলে নিয়ে প্রতারণা করেন। তিনি ‘দর্শন মামলা’ দায়ের করেন। তবে গাজী হোটেল কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট জানায়, মামলায় উল্লেখিত AX নম্বরের কোনো রুম হোটেলে নেই। পুলিশ সরেজমিন তদন্তে গিয়ে মামলার বিবরণ ও হোটেলের বাস্তব চিত্রে আকাশ-পাতাল পার্থক্য খুঁজে পায়। বারবার জিজ্ঞাসাবাদে হোসনার জবাব হয় অসংলগ্ন ও বিভ্রান্তিকর, যা তদন্ত সংশ্লিষ্টদের মনে করেছে সন্দেহ। “পরিবার ভাঙার পরিকল্পিত চেষ্টা” বলছেন ভুক্তভোগীর স্ত্রী সরকারি কর্মকর্তা ইকরামের স্ত্রী রুপা বেগম বলেন, “আমার স্বামী সম্পূর্ণ নির্দোষ। এই নারী প্রতারণার ফাঁদে ফেলে আমাদের পুরো পরিবারকে ধ্বংস করতে চাইছে। এমনকি আমার বাসায় এসে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে।” পরিবারের পক্ষ থেকে নরসিংদী সদর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। পরিবারটি এখন মানসিক এবং সামাজিক চাপে রয়েছে। আইনের অপব্যবহার, সমাজের আতঙ্ক আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি কেউ বারবার বিয়ে ও মামলার মাধ্যমে অর্থ আদায়ের উদ্দেশ্যে নাটক সাজান, তবে সেটি স্পষ্টভাবে ফৌজদারি অপরাধ। এ ধরনের অপব্যবহারে শুধু নিরীহ মানুষ নয়, পুরো সমাজই হয় প্রতারণার শিকার। প্রতারণা নাকি পরিকল্পিত চক্র? প্রতিটি ঘটনায় একই কৌশল প্রেম, বিয়ে, মামলা, ব্ল্যাকমেইল তবে লক্ষ্য আলাদা! তাই প্রশ্ন উঠছে একজন নারী যদি ধারাবাহিকভাবে একই প্যাটার্নে পুরুষদের নিঃস্ব করেন, তবে সেটি কি একক ঘটনা, নাকি সংগঠিত প্রতারণা চক্র? স্থানীয়রা বলছেন,“যদি দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তবে ভবিষ্যতে আরও অনেকে এই চক্রের ফাঁদে পড়বেন।” এই প্রতিবেদন প্রস্তুতে উভয় পক্ষের বক্তব্য যাচাই ও আইনানুগ ভারসাম্য বজায় রাখা হয়েছে। যেহেতু মামলাটি তদন্তাধীন, তাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান সত্য উদঘাটনে নিরপেক্ষ ও কঠোর তদন্তের মাধ্যমে প্রতারক চক্রকে আইনের আওতায় আনা হোক।